Saturday 1 July 2017

রুমা ঢ্যাং

বরাভয় অথবা নয়

 কুশণ্ডিকার আগুনে পুড়ে যাচ্ছে বরাভয়...
অজগরের পিঠ বেয়ে এগিয়ে আসছে
কালো গাড়ির মিছিল

পুড়ানো শাদা কাগজমণ্ড রেখে
চলো, খাটের ঘুন ধরা পায়ার ওপর দাঁড়িয়ে
দীর্ঘ করি আমাদের আলজিব

রাস্তা পারাপারের জায়গায় স্লিপ খেয়ে
সময়ে অসময়ে মেঘফুল হয়ে ঘুড়ে বেড়াই
আমার পাশে উড়ে বেড়ায়
কর্কশ চিল

আলুশাক-কাটা জমি ঘিরে
ঘোষেদের বাড়ি
সেইখান থেকে তোমার উঠে যাওয়া কালাপাহাড়ে
আমার ঠোঁটে তখনও দুধেল শব্দ
ভঙ্গিমায় এক আকাশ ঝুঁকে পড়ে...

পৃথিবীর মানচিত্রে
আমি এক ধ্রুপদী ঝংকার তোলা আরোহী মাত্র
তুমি ফাঁকি দিলে মুষড়ে পড়ে ভাঙা নোঙর
বিষ বাঁওড় জলে
তুমি প্রতিদিন কথা ভাঙার খেলায়
সরবত জল ছোঁও
আর আমি
মৃত্যুকে জলস্পর্শ করিয়ে
রোজ সকালে নিজের গণ্ডূষ ভরি

আমার দেবতা এখানে মুখ্য
তার পায়ে ফুল রেখেই আমাকে সংকীর্ণতা শিখে নিতে হয়
ওভেনের পাশেই দুধ জমে গেলে
আমাকে দৈরাজ্যে থেকেই ক্যালসিয়াম খুঁজে নিতে হয়

রোজকার হোমওয়ার্কে
কাঠের সাঁকোভাঙার কোন উল্লেখ ছিল না
তবু সেই পাটাতনে পা দিলে
লোহার কাঠারির ঘা লাগে আমার ছোট্ট জলবাড়িতে
তরোয়াল নিয়ে দেখো, বিশ্বামিত্র
সেই কবে থেকেই গলা ঝুলিয়ে রেখেছি হাঁড়িকাঠে
তবুও গলা কাটেনি আমার!

সাতডিঙ্গা পেড়িয়ে
কমলালেবুর খোসা কুড়িয়ে এসেছি
এখন আমার আলমারি জুড়ে শুধুই কল্পতরু উৎসব

জাফরিকাটা জানলা ধরে
শিখে নিয়েছিলাম যাবতীয় পাখি সংলাপ
বালির সাথে সমুদ্রের ঢেউয়ের কথোপকথন জানতাম না
তোমাকে সম্বল করেই
 সড়কপথে আমার বৃত্তকলার দেখা
সেই থেকে পাঁচফোড়নে মিশিয়ে চলেছি প্রকৃত পরিচয়

ও করবী, এবার অন্তত বারান্দা থেকে
নামিয়ে দাও রাতের ব্যাপ্তি
বাক্সের ভেতর রাখা থাক মৃতচিঠির মমি
এখন আমি প্রত্নতাত্ত্বিক না হয়ে
সূর্যাস্তের পোর্ট্রেট আঁকি!

 জিটি রোডের ধারে আমার বাড়ির সরু করিডোর
সেখানে থমকে থাকে দূর্বল বিকেলের নিঃশ্বাস
আদুরে হাবভাবে কেটে গেল ছয়মাস
দেখতে দেখতে থেমে গেল কৃষ্ণচূড়ার পাপড়ি ওড়ার সিন
অন্যবাড়িটার নেমপ্লেটে বটের চারা
অবিস্মৃতিচারণে ঝুরি নামবে...

বৃষ্টি নামলে গতি স্তব্ধ হয় ঝড়ের
না-পাওয়াকেই টবের মাটিতে রোপণ করেছি
পাগলামি দিয়ে সাঁতলাতে হবে পদ
ফুলগুলো আমার দিকেই তাকিয়ে আছে
কোথায় যাব!

2 comments:

  1. বাহ।সম্পূর্ণ অন্য ফেজের কবিতা পড়লাম।

    ReplyDelete
    Replies
    1. হুম। একটু অন্যরকম চেষ্টা করলাম। ধন্যবাদ রাহুল

      Delete